Thursday, July 28, 2011

All death penalties by martial court


Senior Awami League leader Suranjit Sengupta on Saturday said if a martial court is termed a “Kangaroo court”, then all death penalties awarded after the August 15 carnage in 1975 will be considered as killings.“Cases can be lodged for such killings in this regard,” he opined. Suranjit, chairman of the parliamentary standing committee on law, justice and parliamentary affairs ministry, made the observations in reply to the recent remarks of BNP Standing Committee Member Moudud Ahmed. Terming the martial court a “kangaroo court”, former law minister Moudud on Friday said the clemency granted to Jhintu by former president Iajuddin Ahmed was a case in the marital court. Suranjit was addressing a discussion meeting organised by Bangabandhu and Jatiya Char Neta Parishad at Dhaka Reporters’ Unity (DRU) in the city marking the 86th birth anniversary of the first prime minister of Bangladesh Tajuddin Ahmed. “Moudud Ahmed admitted that the marital court was the kangaroo court. If the capital punishment awarded to Jhintu by the kangaroo court is illegal, then all the executions by the martial court after 1975 will be illegal. All these will be considered as killings and cases can be filed in this connection,” Suranjit said. “If the words of Moudud Ahmed are right, the martial law should be termed ‘the jungle law’ and those who ruled the country after 1975 like the regimes of Zia, Sayem and Satter as well as all the martial rulers were illegal and their tenures were also illegal. The Fifth Amendment was illegal.
The minister-ship of Moudud also was illegal,” he added. The AL leader criticised Moudud for his comments that clemency awarded to Jhintu and AHM Biplob was different. “Biplob surrendered to the court showing his respect to the law. But Jhintu remained absconding for 22 years,” Suranjit added. State minister for law Qamrul Islam has alleged that senior BNP leader Moudud Ahmed was the man who had implicated A H M Biplob in the murder case. On Saturday Qamrul said, "After Nurul Islam killing in 2000, former president of the Laxmipur Lawyers' Association, Tarek Uddin Mahmud Chowdhury, filed the first case as a plaintiff mentioning none as accused. But following a petition by Moudud Ahmed subsequently, 10 more people including Taher, his wife and three sons, were made accused." "Later, another 24 persons were made accused. Moudud had exercised his influenced in the case as the then law minister." As a result, this verdict came, he said, adding that "all judgements are not real judgements"

আওয়ামী লীগের সাফল্যে ওদের গা'জ্বালা করেঃ মোকতেল হোসেন মুক্তি


আওয়ামী লীগের সাফল্যে ওদের গা'জ্বালা করে। যে কাজটি ওরা করার কথা ভাবতেও পারে না বা ভাবে না, সে কাজটি আওয়ামী লীগ সম্পন্ন করে সাফল্যের তুঙ্গে যাবে এটা ওরা কখনোই মানতে পারেনি বিগত বছরগুলোতেও। প্রশাসনের রন্দ্রে রন্দ্রে এই দেশদ্রোহীদের অবাধ বিচরণ । এরা প্রশাসনের প্রত্যেক শাখায় প্রশাখায় মজবুত শক্তিশালী সিন্ডিকেট।  আওয়ামী লীগের নবাগত নেতৃত্ব দখল করে আছে এ রকম অনেক জামাত শিবির ও বি এন পি’র প্রাক্তন নেতাকর্মী। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় এই নবাগত আওয়ামী লীগারের সংখ্যা সব চেয়ে বেশী। ছাত্রলীগ, যুব লীগ ও অন্যান্ন অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতানেত্রীদের সাথে বন্ধুত্বের সূত্রধরে অনেকেই নব্য আওয়ামী লীগার হিসেবে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের সাথেও হৃদ্যতা ও আন্তরিকতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এদের অনেকেই ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত জামাত বি এন পি’র এক্টিভ মেম্বার ছিলেন। এই স্বাধীনতা বিরোধীচক্রের গোপন চক্রান্ত আওয়ামী লীগ তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি সাফল্যকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করার অন্তরালে ক্যান্সারের মতো কাজ করছে, যা’ আওয়ামী লীগ এখন অনুভব করতে পারছে না বা উপলব্ধিতে নেবার প্রয়োজনবোধ করছে না।
“প্রথমবারের মতো 'পেপারলেস' অর্থাৎ কাগজহীন ফল প্রকাশের সুফল ভোগ করতে পারেনি ফলপ্রার্থীরা। এ বছরই প্রথম এইচএসসি পরীক্ষার ফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। গতকাল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এইচএসসির ফলাফল ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো হলেও কোনো প্রতিষ্ঠানই সঠিক সময়ে ফল ডাউনলোড করতে পারেনি। রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যথেষ্ট বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ” ভিশন ২০২১ এর অন্যতম একটি সাফল্যের অংশ হিসেবে সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল ডিজিটাল পদ্ধতিতে জানানোর ব্যবস্থা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।  যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে, সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক অথবা অধ্যক্ষ স্বশরীরে হাজির না হয়ে ইমেইলের মাধ্যমে পিডিএফ, এম,এস,ওয়ার্ড অথবা এম,এস,এক্সেল ফাইল হিসেবে মুহূর্তেই নিখুঁত ফলাফল পেতে পারেন। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি আওয়ামী লীগ সরকারের একটি ক্ষুদ্রতম হলেও জাতীয় উন্ন্যয়নের তালিকায় মাইলফলক হিসেবে  লিপিবদ্ধ থাকবে।  
আওয়ামী লীগের সব কাজ ও সিদ্ধান্তসমূহই স্বঠিক, এ কথা আমি কখনো অন্ধত্বেরবশে স্বীকার করি না কিন্তু বলতেই হবে এই সর্বাধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতিটি আওয়ামী লীগের একটি বিশাল সাফল্য। যেখানে শিক্ষার্থীদের ঘন্টার পর ঘণ্টা লাইনে থেকে, হাজারো মানুষের ভীড়ে হুড়াহুড়ি ঠেলাঠেলির মতো সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় ফলাফল জানার জন্য। সেখানে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগের হাত থেকে মুক্তি দেবার মহৎ উদ্দেশ্যকে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বিফলতার গ্লানি হিসেবে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নতুন প্রজন্ম তথা দেশবাসীর কাছে ক্ষুন্ন ও হেয় প্রতিপন্ন করার পিছনে বোর্ড অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অবহেলা, স্বীয় কর্মে গাফিলতি অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোতিদভাবে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রচেষ্টা কি না? সেটি ক্ষতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।  
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এই ভোগান্তির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরী। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিধায় এতদ্ববিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠণপূর্বক স্বঠিক তথ্য উদ্ঘটনের জোড় সুপারিশ থাকলো।  

‘যুদ্ধাপরাধের বিচার আমরাও চাই: খালেদা জিয়া

কয়েক দিন আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আলাপ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার আমরাও চাই। কিন্তু বিচারের নামে রাজনৈতিকভাবে কাউকে হয়রানি করা যাবে না।১৯ মে পল্টন ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘বিএনপি যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধী নয়। তবে সেই বিচারের নামে কাউকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা হলে তাঁরা মেনে নেবেন না।খুবই ন্যায়সংগত ও যুক্তিপূর্ণ কথা। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই সব বিচার-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধের মতো স্পর্শকাতর একটি বিচার-প্রক্রিয়ায় কোনো গলদ বা ফাঁকফোকর থাকা উচিত নয়। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যখন যুদ্ধাপরাধের বিচারে বিএনপির সহযোগিতা চাইলেন, তখন দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বললেন, একদিকে সহযোগিতা চাইবেন, অন্যদিকে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাবেন, এ স্ববিরোধী নীতি চলতে পারে না। কেবল তিন শীর্ষস্থানীয় নেতা নন, চিহ্নিত কয়েকজন বাদে গত ১৯ মাসে বিএনপির প্রায় সব স্তরের নেতা-নেত্রীর বক্তৃতা-বিবৃতি ঘাঁটলে দেখা যাবে, সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও কেউ যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নেননি।কিন্তু ৫ অক্টোবর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খালেদা জিয়া তাঁর বক্তৃতায় সরাসরি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদেরও তখনকার সরকার ক্ষমা করে দিয়েছিল। আজ প্রায় চার দশক পর স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগীদের বিচারের কথা বলে জাতিকে হানাহানির দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। সরকারের দুমুখো নীতির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে (প্রথম আলো, ৬ অক্টোবর ২০১০)।আমরা ধন্দে পড়ে যাই। এ কার কণ্ঠ শুনছিমুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপি-প্রধানের কণ্ঠ, না স্বাধীনতাবিরোধী ও মৌলবাদী কোনো দলনেত্রীর?বক্তব্যটি হঠা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে, তা ভাবার কারণ নেই। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে এ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, সংক্ষেপে তার বিবরণও দিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর কথায়, জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রতিধ্বনি ছিল না, ছিল জামায়াতের সুর। 
খালেদা জিয়ার প্রথম কথা হলো, আওয়ামী লীগ প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদেরবিচার করেনি। স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগীদের বিচারের নামে এখন তারা জাতিকে হানাহানির দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। গুটিকয়েক যুদ্ধাপরাধীর বিচার করলে দেশে হানাহানি দেখা দেবে না। বরং তাদের বিচার না হওয়ায় জাতিকে কলঙ্কের বোঝা বইতে হচ্ছে।তাঁর দ্বিতীয় কথা হলো, এই বিচার রুখে দিতে হবে।কী মারাত্মক কথা! বিচার সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হওয়ার কথা নয়। বিচার রুখে দিতে হবে!বিএনপি নিজেকে মধ্যপন্থী, উদার গণতান্ত্রিক ও সাচ্চা জাতীয়তাবাদী দল বলে দাবি করে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও নাকি বিএনপি ছাড়া অন্য কারও হাতে নিরাপদ নয়। স্বাধীনতার সঙ্গে জাতীয় চেতনা, মুক্তিযুদ্ধ, জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি নিশ্চয়ই ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
বিএনপি নেত্রী কোথায় পেলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার করলে জাতি বিভক্ত হবে? হানাহানি সৃষ্টি হবে? কোন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় জাতি বিভক্ত হয়েছে? গণহত্যা ও বর্বরতার দায়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত নাসি বাহিনীর বিচার হয়েছে। বসনিয়া ও কাম্পুচিয়ার যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার চলছে। তাতে সেসব দেশ বিভক্ত বা দুর্বল হয়নি। গ্লানি ও পাপমুক্ত হয়েছে।খালেদা জিয়া প্রায় চার দশক পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্নটি যৌক্তিক, কিন্তু উদ্দেশ্য স নয়। আমরাও মনে করি, মানবতা ও সভ্যতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচার অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। এত দিনেও তাদের বিচার করতে না পারা আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতা। যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বিচার না করে ভুল করেছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেই ভুল সংশোধন করল না কেন? স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপিই তো সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিল। নিশ্চয়ই আবারও তারা ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে।আমরা অতীত নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না। আইন ও ন্যায়বিচারের কথা বলতে চাই। বিএনপি নেত্রীকে জিজ্ঞেস করতে চাই, স্বাধীনতার চার দশক পর যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নিতে আইনগত বাধা আছে কি? নেই। তাহলে বিএনপির গা জ্বালা করার কারণটা কী? তাদের দলে কতজন যুদ্ধাপরাধী আছে? মাত্র একজনের (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী) অপরাধ তদন্ত করায় খালেদা জিয়া এভাবে খেপে গেলেন কেন? না এর পেছনে আরও কারণ আছে? ৮ অক্টোবরের কাগজে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক শিল্পসচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা শোয়েব আহমদ আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘কালীন শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী তাঁকে বলেছিলেন, এ বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ অবগত আছে। সরকার সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ (প্রথম আলো, ৮ অক্টোবর, ২০১০)।যুদ্ধাপরাধের বিচারে খালেদা জিয়া বা বিএনপির অবস্থান পরিবর্তনের সঙ্গে ১০ ট্রাক অস্ত্রের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সেটিও ভেবে দেখার বিষয়। সে দিন মতিউর রহমান নিজামী শিল্পসচিবকে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কথা বলে অভয় দিয়েছিলেন। তার বিনিময়ে আজ কি খালেদা জিয়া নিজামী সাহেবদের এই বলে অভয় দিচ্ছেন যে আমরা আছি তোমার পাশে’?খালেদা জিয়া প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে সহযোগীদের বিচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রকৃতঅপ্রকৃতবলে কিছু নেই। যারা একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত ছিল, তারাই যুদ্ধাপরাধী। খালেদা জিয়া প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীবলতে নিশ্চয়ই দখলদার পাকিস্তানি সেনাদের বুঝিয়েছেন। আমরা তাদের বিচার করতে পারিনি, সেটি আমাদের ব্যর্থতা। তাই বলে দেশীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যাবে না কেন? খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগীবলে তাদের অপরাধ লাঘব করতে চাইছেন। সরকার এখন স্বাধীনতাবিরোধীরবিচার করছে না, তাদের জন্য বিশেষ আদালতও গঠন করা হয়নি। বিচার হচ্ছে একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধে যারা জড়িত ছিল, তাদের। সে সময় জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী, পিডিপি, কৃষক প্রজা পার্টি এবং অন্যান্য দলের হাজার হাজার নেতা ও কর্মী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর দালাল আইনে তাঁদের বিচার শুরু হয়েছিল। অনেকের জেল-জরিমানা হয়েছিল। অনেকে আবার ক্ষমতাসীনদের নানা রকম এনাম দিয়ে ছাড়াও পেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিল, এ কথা ঠিক। সেই ক্ষমার মধ্যে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে কেন ক্ষমাপ্রাপ্তদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করল? দেশের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বানাল? আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে যদি সগিরা গুনাহ করে থাকে, বিএনপি করেছে কবিরাহ গুনাহ।

এরপর খালেদা জিয়া যে ভয়ংকর কথাটি বলেছেন, তা হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার রুখে দিতে হবেতিনি কীভাবে ভাবলেন, জনগণ তাঁর এই আহ্বানে সাড়া দেবে?২০০৮ সালের নির্বাচনের কথা কি তাঁর মনে আছে? সেই নির্বাচনে তিনি দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও স্লোগান দিয়েছিলেন। ভোটাররা আমলে নেননি। বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা ছিল না। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ছিল। জনগণ আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এখন আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করলে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দায়ে তাদের অভিযুক্ত হতে হবে। যেমনটি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে।এ কথা ঠিক, গত ২০ মাসে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কাছে দেওয়া অনেক অঙ্গীকারই রাখতে পারেনি। সর্বত্র দলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগবাজি চলছে। বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির উচিত এর প্রতিবাদ করা। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করছে কেন? আগে বিদেশি জুজুর ভয় দেখাত। কিন্তু যখন দেখা গেল কোনো দেশই তাদের কথা আমলে নিচ্ছে না তখন হানাহানির ভয় দেখাচ্ছে। এটি দায়িত্বশীল বিরোধী দলের কাজ নয়।বিএনপি চেয়ারপারসন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশবাসী দূরে থাক, এ কাজে তিনি দলের কর্মীদেরও পাবেন নাবিএনপিতে হাতে গোনা কয়েকজন যুদ্ধাপরাধী থাকলেও সবাই তাদের সমর্থক নয়। দলের নতুন প্রজন্মের নেতা-কর্মীরাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চান। আমরা স্মরণ করতে পারি, ১৯৯২ সালে গোলাম আযমের নাগরিকত্বকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ঘাতক-দালালবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময় শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের খামোশ করে দিয়েছিলেন। এখনো কি জামায়াতকে রক্ষা করতে খালেদা জিয়া দলীয় কর্মীদের খামোশ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন?যে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, যে দলে এখনো বহু মুক্তিযোদ্ধা আছেন, সেই দলটি যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা কীভাবে করে? তাহলে জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে তো কোনো পার্থক্য থাকে না।খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত অন্যান্য পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করলেও রুখে দিতে বলেননি, কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচার রুখে দিতে বলেছেন। কেন রুখে দিতে হবে? তাতে জামায়াতের নেতারা, অর্থা তাঁর দলের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরা খুশি হবেন বলে? এ আহ্বানের একটাই উদ্দেশ্য, তা হলো যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর মিশনে নেমেছেন তিন-তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালনকারী খালেদা জিয়া। কেন তাদের বাঁচাতে হবে? মনে রাখবেন, জামায়াতের মিত্রতা রক্ষার বিনিময় মূল্য অনেক বেশি। বিএনপি হঠা কেন যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিল? কার স্বার্থে? তাহলে আওয়ামী লীগের নেতারা যে অভিযোগ করে আসছিলেন সেটাই ঠিকবিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চাইছে।খালেদা জিয়া আরও বলেছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ একটি সুন্দর দেশ ও সমাজ গড়ার জন্য জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। আজ সেই মুক্তিযুদ্ধকে জাতির বিভাজনের হাতিয়ার করার অপচেষ্টা চলছে। ইতিহাসের বিকৃতিকে আমরা মেনে নিতে পারি না।’ 
ইতিহাসের বিকৃতি কারও কাম্য নয়। ইতিহাস নির্মাণে যাঁদের কোন ভূমিকা নেই, তাঁরাই ইতিহাস বিকৃতি করেন। এর দায় থেকে কেউ মুক্ত নন। ক্ষমতার হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গে নাম কর্তন হয়, নাম যুক্ত হওয়ার মহড়া চলে। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ১৫ খণ্ডের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রকে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জিয়াউর রহমানের উদ্যোগেই এ দলিলপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। চারদলীয় জোট আমলে তৃতীয় খণ্ড থেকে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটিই গায়েব করে দেওয়া হয়েছিল কার নির্দেশে? এর উদ্দেশ্য পরিষ্কার। জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানো। ২৭ মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে জন্য বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি গায়েব করতে হবে কেন? ইতিহাসে যাঁর যেটুকু স্থান তা দিতে হবে। একাত্তরে জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল। কতিপয় রাজাকার-আলবদর ও শান্তি কমিটির সদস্য বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ঠেকাতে পারেনি। খালেদা জিয়া কিংবা তাঁর দল বিএনপিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে পারবে না। যদি গায়ের জোরে বিচার ঠেকাতে চায়, তাহলে জনগণই তাদের ঠেকিয়ে দেবে।

Thursday, July 21, 2011

দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ 1971



দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ =================== আমরা স্বাধীনতার জন্য লড়ছি আর সেই সব ভিনদেশী মানুষ গুলো আমাদের জন্য চেষ্টা করছে তাও আবার যে দেশটি চায় না স্বাধীন হোক এই দেশটা,সেই মাটিতেই! যে সময় জেনেছি এই ব্যাপারটি তখন থেকেই আমার এই মনের ভেতর যেন আজীবনের জন্য গেথে গিয়েছে কিছু নাম। সবসময়ের শ্রদ্ধা আর ভালবাসা থাকবে এই সব গুনী মানুষদের জন্য,যাদের প্রান কেদেছিল এই আমার মাটি আর মানুষের জন্য ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামকালীন সময়ে। প্রায় চল্লিশ হাজার দর্শক এর সামনে নিউইয়র্ক এর সেই বিখ্যাত মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনের মায়াভরা জায়গাটায় সবাই যেন এক হয়ে গিয়েছিল আমাদের এই বাংলাদেশ নামক একটি ছোট্র দেশের বিপদের সময়টায়। কেন জানি বিশ্বাস হয় সেই সময়ের কনসার্টে যারাই দর্শক হিসেবে অংশ নিয়েছিল তারা সবাই ই আমাদের দেশের শুভ কামনার জন্যই জড়ো হয়েছিল। এ স্মৃতি কি কখনো মুছে ফেলা যায়! এ যে কখনো হারাবারও নয়! ৭১এর সেই বিপর্যয়ের সময়ে ফান্ড সংগ্রহ করার জন্য কনসার্ট। আর এর জন্য একা জর্জ হ্যারিসনই তার প্রিয় ব্যান্ডের প্লাটফর্ম এ না গেয়ে প্রতিবাদি হয়ে বাংলাদেশের অসহায় মানুষের পাশে এসে দাড়ান সংগীতের মাধ্যমে। সময়টা ছিল আগষ্ট এর ১ তারিখ,১৯৭১ সাল। প্রথম শুরু করেছিলেন পন্ডিত রবি শঙ্কর এর সেতার সাথে ওস্তাদ আলী আকবর খানের সরোদ দিয়ে সে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয়া কনসার্ট – দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। আর তো ছিলেন’ই সে কালজয়ী তবলা বাদক ওস্তাদ আল্লারাখা এবং তাম্বুরায় কমলা চক্রবর্তী। পরে একে একে সবাই পারফর্ম করেন স্টেজে।সেই কনসার্ট থেকে অর্জিত সব অর্থ পরে ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশের যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থ শিশুদের সহায়তার কাজে ব্যয় করা হয়। আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো এই অসাধারন একটি জ্বলন্ত ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকা এই ডকুমেন্টসটি।

Thursday, July 7, 2011

বাঙ্গালীদের ভুলো মন তাই অতি সহজেই অতীতকে ভুলে যায়।






২১ আগষ্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নক্সা অনুযায়ী
গ্রেনেড হামলা করা হয় এই জনসভায়।

পুলিশ কর্তৃক রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন প্রথা জিয়া ও এরশাদের আমল থেকেই চালু হয়েছে এবং সর্বশেষ আমাদের ঘসেটি বেগম পুনঃ চালু করে গেলেন এইতো মাত্র দুই হাজার এক থেকে দুই হাজার সাত পর্যন্ত। এখন এটা বাঙ্গালী সংস্কৃতিও বলতে পারেন। জামাত বি এন পি কর্তৃক সৃষ্ট প্রথা সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম, যেটা ইচ্ছে করলেই যদি তুলে দেয়া না যায়। তাহলে পুলিশ কর্তৃক নেতার বস্ত্রহরণ প্রথা কিভাবে আওয়ামী লীগ প্রত্যাহার করবে? কারন পুলিশ না হয় ধরে নিলাম খারাপ। কিন্তু জয়নাল ফারুকের মতো একটা দাগী ক্রিমিনাল সন্ত্রাসী যদি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সাথে সন্ত্রাসী সূলভ আচরণ করেন? তাহলে বন্ধুকধারী পুলিশ তাকে স্যার স্যার বলে মাথা নত করে থাকবে, সেটাই কি আপনারা কিভাবে আশা করছেন? আপনারা ভুলে গেলেন এইতো গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নাসির উদ্দিন পিন্টু ডেপুটি জেলারকে উত্তম মাধ্যম দিলেন? এপ্রথা বিএনপি'র সৃষ্ট। কই, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা নেত্রী এমন ঘটনাতো ঘটিয়েছে বলে শুনিনি? বরং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ নাসিমকে কোহিনুর যে ভাবেবিনা দোষে পিটিয়ে ধুলায়ে লুন্ঠিত করেছিলো, তখন আপনাদের নীতি বাক্যগুলো শুন্তে পাইনি। কারন তখন ফেসবুক এতো জনপ্রিয় ছিলোনা। আইন শৃঙ্খলা এবং প্রজাতন্ত্রের নিরাপত্তারক্ষীদের উপর সেমিনার করে তাদের আচরণ বিধি মনে করিয়ে দিতে হবে। মেনে নিলাম, তারা জ্ঞান সাধন করে চরিত্র বদল করে ফেলল । কিন্তু আপনার সন্ত্রাসী জয়নালদের চরিত্র বদলের জন্য কি করবেন? পিন্টুদের কি করবেন? বাবর সাকাদের কি করবেন>? অন্যথায় আপনাকে এই পুলিশ কর্তৃক নেতার বস্ত্রহরণ প্রসঙ্গে আরো বাস্তবমূখী হতে হবে। এখন আর সে যুগ নেই, যে যুগে পুলিশ দেখলে মানুষ গ্রাম ছাড়া হয়ে যেতো এবং পুলিশো সৎ ও নিষ্টাবান নেই যে শিক্ষিত নেতা নেত্রী এম পি মিনিষ্টারদের অত্যাচারের পরেও হুজুর হুজুর বলে তেল মালিশ করবে। আমরা মুলতঃ পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করে থাকি। ২০০১ ২০০৭ এর কালো দাগ আমার চেহারায় এখনো স্পষ্ট বিদ্যমান। আমার মাথার চুলগুলো ডান হাতের গোড়ার প্রচন্ড ব্যথা, তিনটি ভূয়া মামলা, সব ই কি ভুলে যাওয়া সম্ভব? হাওয়া ভবনের গড ফাদারদের নির্মম নিষ্টুর আচরণ, নির্যাতন লুন্ঠন, ধর্ষণ, খুন, চাঁদাবাজি, বিদেশী ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা পাচার, জননেত্রীশেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নক্সা? আইভি রহমানের অপমৃত্যু?আওয়ামী লীগের ব্যাংক ভোটার বলে কথিত হিন্দু ও নৌকায় ভোটদানকারী ১০ লক্ষ সংক্যালঘুদের গৃহছাড়া করা? ১০ হাজার হিন্দু যুবতী মেয়েকে গণ ধর্ষণ করা? এতো কিছু জাতি কি করে মাত্র ২ ৩ বছরের ব্যবধানে ভুলে যায়?  

Monday, July 4, 2011

21 August Grenade Attack to Sheikh Hasina: Wanted Tareq Rahman


গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

২০০৪, ২১ আগস্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক রক্তাক্ত দিন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে নৃশংসভাবে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে ব্যর্থ হলো প্রাসাদ ষড়যন্ত্র। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন শেখ হাসিনা। সাত বছর পর গতকাল রোববার আদালতে অভিযুক্ত ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ২০০৮ সালের ১১ জুন মামলার প্রথম চার্জশিটে আসামি ছিলেন ২২ জন। এ নিয়ে গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি হলেন ৫২ জন। চার্জশিটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় রয়েছেন শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক চার সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশের তিন সাবেক আইজি। তালিকায় রয়েছেন ভারতীয় দুই জঙ্গি। গতকাল রাতেই তারেক রহমানসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ নিয়ে গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের মধ্যে ২৫ জন কারাবন্দি। সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১৮ জন পলাতক। ১১ জন কারাবন্দি। জামিনে আছেন ঢাকা সিটির ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান। 
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবল্পুব্দ এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন প্রাণ হারান। আহত হন পাঁচ শতাধিক। চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান। ঘটনার পর মতিঝিল থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মূল কুশীলবদের বাঁচানোর জন্য বিগত চারদলীয় জোট সরকার গ্রেনেড হামলার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জমজমাট জজ মিয়া নাটক সাজায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ওয়ান-ইলেভেনের পর ফের মামলার তদন্ত শুরু হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর। ঘটনার ৪৬ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই অভিযোগপত্রে মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। গ্রেনেডের উৎস ও মদদদাতাদের শনাক্তের জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর আদালত মামলার বর্ধিত তদন্তের আদেশ দেন। ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট তদন্ত শুরু করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ। গতকাল সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার তদন্ত শেষ হলো।

আদালতে সম্পূরক চার্জশিট : গতকাল দুপুর সোয়া ২টায় দুটি ট্রাঙ্কে করে অভিযোগপত্র ঢাকার আদালতে নিয়ে যান পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক সামিউল বাসিত। বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের বিক্ষোভের মধ্যেই চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ কমিশনার আবদুল কাহ্হার আকন্দ স্বাক্ষরিত চার্জশিট ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দাখিল করা হয়। গ্রেনেড হামলার সাত বছর ও বর্ধিত তদন্তের আদেশের প্রায় দুই বছর পর এ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিট দাখিল উপলক্ষে গতকাল আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ঢাকা মহানগর জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগপত্রের নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তারেক রহমান হামলার পরিকল্পনা ও আসামিদের পালিয়ে যেতে প্রশাসনিকভাবে সহায়তা করেছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে এ তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলার উৎস, সরবরাহ ও মদদদাতা হিসেবে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাদের আসামি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে জানা যাবে, কীভাবে তারা হামলার পরিকল্পনা ও সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এ গ্রেনেড হামলা করেছিল। হামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত হলে বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতায় থাকা নিরঙ্কুশ হতো। তাদের কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকত না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার জন্য কাউকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। বর্ধিত তদন্তে নতুন করে ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। প্রথম চার্জশিটে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল, আবদুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমুসহ ৪০৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। আলামত জব্দ দেখানো হয়েছিল ৬৯ ধরনের।

এদিকে হানিফ পরিবহনের মালিক মোঃ হানিফের চার্জশিটভুক্তির বিষয়ে সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায় যে ষড়যন্ত্র বৈঠক হয়, সে বৈঠকে হানিফ উপস্থিত ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। একই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুর রহমান। মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক ও লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার গ্রেনেড সরবরাহকারী হুজি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিনকে ভিন্ন নামে পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এমনকি গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার কথাও তারা জানতেন। 
পুলিশের সাবেক তিন আইজিসহ যে আট কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার সময় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও গ্রেনেড হামলার বিষয়টিকে তারা গুরুত্বসহকারে নেননি। এমনকি ঘটনার এক বছর পর মুফতি হান্নান র্যা বের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রেনেড হামলার বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো তথ্য আদায়ে তৎপর ছিলেন না এসব পুলিশ কর্মকর্তা।
সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা গতকাল রাতে সমকালকে বলেন, চার্জশিটের আসামি হওয়ায় তিনি হতবাক। তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তিনি বাসায় রয়েছেন। ঘটনার সময় তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। আজ সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি।

সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার সময় আশরাফুল হুদা বিদেশে থাকলেও দেশে ফেরার পর গ্রেনেড হামলার ঘটনা তদন্তে কোনো উদ্যোগ নেননি। দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে ওই সময় মামলাটির অগ্রগতির বিষয়ে দেখভাল করেননি।
আইনজীবীদের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল : সম্পূরক চার্জশিটে লুৎফুজ্জামান বাবর, তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ 'মূল হোতাদের' নাম থাকায় আদালত অঙ্গনে আনন্দ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা। তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের চার্জশিটভুক্ত করার প্রতিবাদে একই সময় মিছিল করেছেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। 
আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরুর নেতৃত্বে দুই শতাধিক আইনজীবী সিএমএম কোর্ট এলাকা থেকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি আইনজীবী সমিতি এলাকা হয়ে সিএমএম কোর্ট ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে আইনজীবীরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

অন্যদিকে একই সময় বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি আদালত চত্বর থেকে রাস্তায় যেতে চাইলে সিএমএম কোর্টের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় আইনজীবী নেতারা বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে।
সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত ৩০ আসামি (আসামির ক্রম অনুযায়ী) : সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাংসদ শাহ মোফাজ্জল হুসাইন কায়কোবাদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ, বিএনপির ঢাকা মহানগর শাখার নেতা ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির (আইডিপি) আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ওরফে গোলাম মোস্তফা, হুজি নেতা মাওলানা আবদুর রউফ, হুজির নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাবি্বর, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, বিএনপি নেতা আবদুল সালাম পিন্টুর ছোট ভাই রাতুল আহমদ বাবু ওরফে বাবুল, ডিএমপির তৎকালীন ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, ডিআইজি সাঈদ হাসান খান (ঘটনার সময় ডিএমপির দক্ষিণ বিভাগের ডিসি), সাবেক আইজিপি মোঃ আশরাফুল হুদা (ঘটনার সময় ডিএমপি কমিশনার), সাবেক আইজিপি শহুদুল হক, সিআইডির সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সিআইডির সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক আইজিপি খোদা বখস্ চৌধুরী (ঘটনার সময় সিআইডির প্রধান), খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার ও মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন। 

গ্রেফতার ১১ জন : সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত ১১ জন কারাবন্দি। তারা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির (আইডিপি) আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ওরফে গোলাম মোস্তফা, হুজি নেতা মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, হুজির নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাবি্বর ও খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক।
যে ১৮ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে : বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হুসাইন কায়কোবাদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ, ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (বরখাস্ত), মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, হুজি নেতা হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, বিএনপি নেতা আবদুল সালাম পিন্টুর ছোট ভাই রাতুল আহমদ বাবু ওরফে বাবুল, সাবেক আজিপি শহুদুল হক, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, সাবেক আইজিপি খোদা বখস্, ডিএমপির তৎকালীন ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, ডিআইজি সাঈদ হাসান খান, সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও সিআইডির সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ।
প্রথম চার্জশিট ও বিচার : দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার ৪৬ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডির সিনিয়র এএসপি ফজলুল কবির ২২ জনকে আসামি করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুই মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। মামলা দুটি একই বছর দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ২১ আগস্টের ঘটনায় বিস্ফোরক মামলার বিচার চলছে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হকের আদালতে। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ চেমন চৌধুরীর আদালতে চলছে হত্যা মামলার বিচার। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। আদেশে নেপথ্য মদদদাতা ও গ্রেনেডের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বলা হয়। এরপর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ মামলাটির অধিকতর তদন্ত শুরু করেন। অধিকতর তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার জন্য ১৩ দফা সময় বাড়িয়েছেন আদালত।
যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন : বর্ধিত তদন্তকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ও মামলার প্রথম চার্জশিটভুক্ত আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও আবু জান্দাল।

তাজউদ্দিনকে বিদেশে পাঠানো হয় : ২০০৫ সালের অক্টোবরে মুফতি হান্নানকে গ্রেফতারের পর জানাজানি হয়, গ্রেনেড সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন। এ কারণেই মাওলানা তাজউদ্দিনকে 'মোঃ বাদল' নামে রাজশাহীর ঠিকানায় একটি পাসপোর্ট করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ভয় নেই : হুজির সামরিক কমান্ডার আফগান যোদ্ধা মাওলানা আবদুর রউফ তার জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর ও উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর সহায়তায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। সাবেক এ দুই মন্ত্রীর মাধ্যমে এ জঙ্গি সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ করত হাওয়া ভবন। এ ছাড়া মুফতি হান্নান তাকে জানিয়েছিলেন, 'আমাদের সঙ্গে মন্ত্রী ও হাওয়া ভবন আছে। আমাদের ভয় নেই।'

সাক্ষী হিসেবে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন : লে. কমান্ডার (অব.) মিজানুর রহমান, লে. কর্নেল (অব.) আফজাল নাছির ভূঁইয়া, মেজর জেনারেল (অব.) সাদেক হাসান রুমী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মেজর (বরখাস্ত) মনিরুল ইসলাম, র্যা বের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের সাবেক কর্মকর্তা মেজর আতিকুর রহমান, সিআইডির সাবেক প্রধান ফররুখ আহমেদ, ডিএমপির পূর্ব বিভাগের তৎকালীন এডিসি মোস্তফা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক আইজিপি আনোয়ারুল ইকবাল, সাবেক আইজিপি শহুদুল হক, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, ডিএমপির সাবেক কমিশনার মিজানুর রহমান, সিআইডির ডিআইজি শামছুল হক, সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম, বেসরকারি সংস্থা আল-মারকাজুল ইসলামীর ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি আবদুর রশিদ, ভারতীয় জঙ্গি মাজেদ ভাটের স্ত্রী মনোয়ারা সুলতানা, শাশুড়ি নাহিদ লায়লা প্রমুখ।
প্রথম চার্জশিটে আসামি যারা : প্রথম চার্জশিটভুক্ত ২২ আসামির মধ্যে ১৪ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান, তার ভাই মফিজুর রহমান ওরফে অভি, আবুল কালাম আজাদ, শরিফ শহিদুল ইসলাম ওরফে বিপুল, মাওলানা আবু সাই ওরফে ডা. আবু জাফর, জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহমেদ ওরফে তামীম, মুফতি মইন উদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, রফিকুল ইসলাম গাজী ওরফে সবুজ, উজ্জ্বল ওরফে রতন ও শাহদাত উল্লাহ জুয়েল।
প্রথম চার্জশিটে পলাতক ছয় আসামি : গ্রেনেড সরবরাহকারী মাওলানা তাজউদ্দিন (টাঙ্গাইল), মোঃ ইকবাল (ঝিনাইদহ), মাওলানা আবু বকর (বরিশাল), মোঃ খলিলুর রহমান (মাগুরা), জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর (দোহার, ঢাকা) ও মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার (গোপালগঞ্জ)। এ ছাড়া দুই আসামি দুই যমজ ভাই ভারতের দিলি্লর তিহার জেলে আটক আনিসুল মোরসালিন ও মহিবুল মোত্তাকিন (ফরিদপুর)।